Monday, September 14, 2015

ফিল্ম সেন্সরশিপ - কিছু প্রশ্ন



ভারতীয় দর্শকের 'বিদেশী' চলচ্চিত্র দেখার বিষয়ে ব্রিটিশ রাজতন্ত্র প্রথম থেকেই ছিল স্পর্শকাতর বিশেষ করে 'নেটিভ' গুলো আদৌ এই নতুন মাধ্যমটি 'সঠিক' ভাবে ব্যবহার করতে পারবে কিনা সেই নিয়ে ছিল বিস্তর সংশয় ।  তাই ঔপনিবেশিক ক্ষমতাপ্রদর্শনের হেতু হিসেবেই হয়ত ১৯২৭-২৮ সালে তৈরী করা হয় The Indian Cinematograph Committee (ICC) | ভারতের ফিল্ম সংস্কৃতি ও সেন্সরশীপ বিষয়ে একটি নিয়মানুগ গবেষণার পরিকল্পনা ছিল গোড়াতে । সেই সময় মহাত্মা গান্ধীর কাছে প্রশ্ন গেলে তিনি সিনেমা সম্বন্ধে বলেন - “The evil that it has done and is doing is patent. The good, if any at all, remains to be proved." আরো দশ বছর পর ভারতীয় চলচ্চিত্রের ২৫ বছর উপলক্ষ্যে এক সাক্ষাত্কারেও গান্ধীর অবস্থান বিশেষ পালটায় না। অন্যদিকে একই সময়ে লালা লাজপত রাই বরং অনেক প্রগতিশীল - "I am sufficiently confident that our people will be able to resist the evil influences of the cinema on account of the general atmosphere of sexual morality that prevails in this country... I don’t want the youth of this country to be brought up in a nursery. They should know all these things, because they will be better able to resist those things when they go out. They should see all those things here and they will be able to understand all the points of modern life."  অতএব বোঝা যায় ভারতবর্ষে সিনেমার শুরুর দিন থেকেই তার সঙ্গী হয় অনাস্থা, সন্দেহ এবং তার ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে ভয় । ১৯৫২ সালে পার্লামেন্টে পাস হয় The Cinematograph Act এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে Central Board of Film Certification (CBFC) গঠিত হয় একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে। সেন্সরশিপের নিয়মাবলী হিসেবে নির্দিষ্ট করা আছে - "The Cinematograph Act lays down that a film shall not be certified if any part of it is against the interest of the sovereignty and integrity of India, the security of the State, friendly relations with foreign States, public order, decency or involves defamation or contempt of court or is likely to incite commission of any offence." দীর্ঘ ৬০ বছর পর ২০১৩ সালে মুকুল মুদগালের (পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি) সভাপতিত্বে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয় যারা মূলত খতিয়ে দেখেন সেন্সর সার্টিফাইড যে সমস্ত ছবি সম্প্রতি banned হয়েছে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের দ্বারা যেমন কামাল হাসান অভিনীত 'বিশ্বরূপম' (তামিল নাড়ু রাজ্য সরকার দ্বারা আরোপিত নিষেধাজ্ঞা যা পরে উঠিয়ে দেওয়া হয়) কিংবা কিছু আগের 'মাদ্রাস কাফে' কিংবা 'আরক্ষণ' ইত্যাদি । এই কমিটি সুপারিশ করেন যে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার একটি ফিল্ম স্ক্রীনিং স্থগিত রাখতে পারেন, কোন রাজ্য সরকার তা করতে পারবেন না । কমিটি বয়স সংক্রান্ত শ্রেণীবিভাগেরও একটি পরিবর্তন চেয়েছেন - বর্তমানে মূলত তিন ধরনের সার্টিফিকেশন হয় - 'U', 'A' এবং 'U/A'.  এর মধ্যে 'U/A' কে ভেঙ্গে দিয়ে ‘12+’ ‘15+’ এই দুই কেটিগরি আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং প্রনয়ন করা হয়েছে The Cinematograph Bill 20I3  । এই সূক্ষ্ম পরিবর্তনের পিছনে যে মূল দর্শনটি কাজ করছে তা হল ফিল্মকে  সেন্সর রেটিং প্রদান করা গ্রাফিক, অরাল কিংবা ন্যারেটিভ বিষয়-বস্তুর ওপর ভিত্তি করে, তার বেশি কিছু  নয় । অর্থাৎ সেন্সর বোর্ড  ছবির গায়ে কাঁচি চালাবে না তারা শুধু মার্ক করে দেবে - ভিউয়িং এর অধিকার দর্শকের ওপরই বর্তাবে । সেন্সর বোর্ডের চেয়ার-পারসন লীলা সামসন মনে করছেন - "By moving our focus from certification to classification, we could aim to provide the filmmaking fraternity with the tools to reach out to their target consumer" |

রাষ্ট্র ও সেন্সর
ভারতবর্ষের মত তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে সেন্সর বোর্ড রাষ্ট্রের হাতে থাকবে সেটায় অবাক হওয়ার মত কিছু নেই । পৃথিবীর তথাকথিত বহু  উন্নত দেশেও সেন্সরশিপকে রাষ্ট্রের একটি অস্ত্র হিসেবেই ভাবা হয় । অর্থাৎ যে মুহুর্তে রাষ্ট্র মনে করবে একটি চলচ্চিত্র দেশের পক্ষে খারাপ কোন অর্থে তখনই তার ওপর নেমে আসবে সেন্সরের খড়্গ । পোলিশ চলচ্চিত্র করিয়ে  ক্রিস্তফ কিয়েসলোস্কি  বিরক্ত হয়েই বলেছিলেন - "“Why did they devise censorship? To show a world which doesn’t exist, an ideal world, or what they envisaged as the ideal world. And we wanted to depict the world as it was.”  মাথায় রাখতে হবে যে সাহিত্য, ট্রাডিশনাল মিউজিক ,চিত্রকলার তুলনায় ধরেই নেওয়া হয় চলচ্চিত্র  সবচেয়ে বেশি সর্বগ্রাসী এবং সর্বজনস্বীকৃত তার অপরিসীম জনপ্রিয়তার জন্য । আর সেকারনেই চলচ্চিত্রকে নিয়ে এত ভয়, ত্রাস । একসাথে লক্ষ-কোটি মানুষকে উদ্বেলিত করত পারে সিনেমা আর তাই এই সাবধানতা। সে কারনেই শিল্পের অন্যান্য শাখায় সেন্সর নেই, সিনেমায় আছে । সাহিত্য অনেক ক্ষেত্রেই banned হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক ও উঠেছে কিন্তু খেয়াল করতে হবে যে তা সত্ত্বেও কোন সাহিত্য প্রকাশিত হওয়ার আগে পাবলিশরের দায় নেই কোনো সেন্সর বোর্ডের সার্টিফিকেট সংগ্রহ  করার ।  
১৯৭০ সালে বিচারপতি হিদায়াতুল্লার গুরুত্বপূর্ণ 'K. A. Abbas vs Union of India' কেস এর একটি উল্লেখযোগ্য সূত্র হল - "The motion picture is able to stir up emotions more deeply than any other form of art. Its effect particularly on children and adolescents is very great since their immaturity makes them more willingly suspend their disbelief… They also remember the action in the picture and try to emulate or imitate what they have seen. A person reading a book or other writing or hearing a speech or viewing a painting or sculpture is not so deeply stirred as by seeing a motion picture”| সুতরাং ধরে নেওয়া হচ্ছে একটি 'অপর'কে যে শক্তিশালী মিডিয়ার প্রলোভন উপেক্ষা করতে না পেরে সহজেই প্রভাবিত হয়ে বিপথগামী হয়ে যেতে পারে । ঠিক যেভাবে দীপা মেহতার 'ফায়ার' ছবি দেখে নৈতিক পুলিশ তাকে যৌন ভ্রষ্টাচারের দোষে দুষ্ট করেছিল - সনাতন 'পরিবার' সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে এক অন্য ধরনের ভালবাসার কথা বলার জন্য । এবং এই নিরিখে লালা লাজপত রাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ওপরোক্ত কমেন্টটি ইর্রেলেভান্ট হয়ে যেতে থাকে । অন্য কথায়, CBFC একটি রাষ্ট্রীয় ফিল্টার যা স্বভাব-গত ভাবেই পুরুষ-তান্ত্রিক আর সেকারনেই শরীরিক, অর্থনৈতিক এবং মানসিক কমজোরী হিসেবে চিন্হিত হয়ে যায় শিশু, নারী, দরিদ্র , গ্রামবাসী এবং নিরক্ষর - তাদের 'রক্ষা'করার মহান দায়িত্বে ব্রতী থাকতে চায় রাষ্ট্র । কিন্তু প্রশ্ন কিছু থেকেই যায় এর পরেও । সিনেমা ব্যতিরেকে, সাধারনভাবে মিডিয়ার ক্ষেত্রেও কিছু সেন্সরশিপ তো এসে যায়ই । ধরা  যাক টিভি - তার যে প্রোগ্রাম যেমন নিউজ বুলেটিন সেখানে সেন্সরশিপকে এড়ানো সম্ভব  কি?উদাহরন  হিসেবে ভাবা যেতে পারে মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে টেররিস্টদের নাশকতার ভয়াবহ ঘটনা  - দেশের বেশিরভাগ চ্যানেল তখন লাইভ টেলিকাস্ট করছে ঘটনাস্থল থেকে । পরে বোঝা গেল ভারতীয় আর্মির পুন্খানুপুন্খ গতিবিধির খবর ওই সংবাদ মাধ্যমের সূত্রেই পৌঁছে যাচ্ছে আতঙ্কবাদীদের কাছেও । এবং এরপরে  সরকারী নির্দেশে বন্ধ করা হয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্প্রচার যদিও টেলিকাস্ট বন্ধ করা হয় না ।
আরেকটা প্রশ্ন ও থাকে - আজ টেলিফোন সার্ভিস প্রভাইদের রমরমা, কম দামে বড় স্ক্রিন-ওয়ালা সস্তার স্মার্টফোন এবং দেশের প্রত্যন্ত কোনেও নেটয়ার্ক পাওয়ার সুবিধা -এর ফলে হাতের মুঠোয়  এসে যাচ্ছে ইন্টারেনট। চীন ও এশিয়ার অন্য অনেক দেশের মতো আমাদের দেশে কিন্তু এখনো ইন্টারনেটের ওপর কড়া সেন্সরশিপ শুরু হয়নি । তাই যে কেউ এখনো আমাদের দেশের  ইন্টারনেটের সাহায্যে পর্নোগ্রাফি দেখতে পারে অনায়াসে । সারা পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন ফেমিনিস্ট দল মনে করেন “Pornography is the theory, and rape is the practice” বাড়ির ছোট সদস্য যারা তারা অনেকেই আজকাল ইন্টারনেটে এক্সপোজ-দ । তাদের জন্য কি ইন্টারনেটে পর্নো সাইট গুলোকে সেন্সর করে দেওয়া উচিত ? নাকি উচিত আমাদের বাড়ির ইন্টারনেট কানেকশন গুলোয় ফিল্টার লাগানো ? যদি  দ্বিতীয়টা সঠিক মনে হয়  তাহলে কিন্তু ঘরের অভ্যন্তরে আপনিও রাষ্ট্রের ভূমিকাই পালন করলেন ।  তা সত্ত্বেও এটা হয়ত সবাই মানব যে 'গার্জেনশিপ' এর প্রয়োজন থাকলেও 'সেন্সরশিপ' এর সম্ভবত নেই । তাই 'ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন' কে মর্যাদা দেওয়ার পাশাপাশি প্র্যাকটিস করা দরকার 'ফ্রিডম অফ চয়েস' কেও । সেন্সর-বোর্ডের  কাজ শেষ হয়ে যাওয়া উচিত রেটিং দেওয়া অব্দি, মানুষ নিজে ঠিক করে নেবে কোনটা দেখবে, আর কোনটা না ।এখানে একটা জিনিস ভাবা দরকার যে 'ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন' এ বিশ্বাস রাখতে গেলে তা সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে এটা মেনে নিতে হবে । ১৯৯৩ সালে 'খলনায়ক' সিনেমার অডিও ক্যাসেট উপলক্ষে একটি  বিতর্ক তৈরী হয় 'চোলী কে পিছে কেয়া হ্যায়' এই গানটিকে কেন্দ্র করে । R P Chugh নামক একজন উকিল এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)র সমর্থক 'অশ্লীল' হিসেবে গানটির  বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করেন দিল্লি হাই-কোর্টে । তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী গানটি কুরুচিকর, নারীজাতির মানহানিকর এবং সমাজে এর ফলে অপরাধ সংঘটনের উদ্রেক হতে পারে । এই পিটিশনে যৌনতা সম্পর্কে দুটি নির্দিষ্ট অনুমান করা হয় যা ভারতের পিতৃতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অবস্থানকেই প্রমানিত করে - এক, যে যৌনতা মাত্রই তা অশ্লীল হয়; দুই, যৌন রেফারেন্স নারীকে সাধারনভাবে অসম্মানই করে । কিংবা ধরা যাক 'বর্ডার' বা 'গদার' এর মত কিছু ছবি যেগুলো গত ১৫-২০ বছরে তৈরী হয়েছে এবং যার মূল চালিকাশক্তি পাকিস্তান বিদ্বেষ - সেকারণে যথেচ্ছ ভায়োলেন্স ('পাকিস্তান মুর্দাবাদ' ধ্বনি সমেত) , অথবা 'সত্যা', এমনকি 'হায়দার' এর মত ছবি ও । ছবির ভায়োলেন্স কতটা আমাদের সামাজিক জীবনের ভায়োলেন্সকে প্রভাবিত করে সেটা সমাজ-বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন । বলার কথা এটাই যে  আমরা যদি মনে করি 'ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন' সমস্ত মানুষের তথা পরিচালকেরই আছে এবং সেন্সর-বোর্ডের এক্তিয়ার নেই দৃশ্য কেটে মরালিটির ধ্বজা ওড়ানোর, তাহলে 'হায়দার'এর পাশে একটা 'গদার' কিংবা একটা 'খলনায়ক' ও আমাদের মেনে নিতেই হবে । এর বিপরীতে আনন্দ পটবর্ধনের 'জং আউর আমন' যা রাষ্ট্রের গৌরব হিসেবে বিজ্ঞপিত ভারতের নিউক্লিয়ার শক্তিকে কটাক্ষ করে সে ছবির ভাগ্যে জোটে অসংখ্য 'কাট'  এবং তারপরেও প্রদর্শনের সময় সম্মুখীন হতে হয় অসংখ্য বাধার   

কাঁচি ও ক্যাঁচাল
সেন্সর বোর্ডের মূল লক্ষ একটি ছবি কে সার্টিফিকেট প্রদান করা তার বানিজ্যিক রিলিজের জন্য - তার বেশি কিছু নয় । সেই কাজটা করতে গিয়ে এখন অব্দি আমরা দেখেছি কিভাবে সেন্সর বোর্ড চেয়েছে সিনেমার গায়ে কাঁচি চালাতে । আমাদের আপাত-বুদ্ধিতে আমরা বুঝতে পারিনি কেন কোন কোন ছবি বা দৃশ্য যা কমার্শিয়াল ছবিতে রমরম করে চলছে তার ওপর কাঁচি পড়েনি সেন্সরের অথচ অনেক বেশি বাস্তব-সত্যি কে তুলে ধরা হলে সেই ছবির ওপর নেমে এসেছে সেন্সরের কোপ । কিন্তু বুঝতে হবে সেন্সর মানেই নেসেসারিলি 'ব্যান' নয় । সেন্সরের উদ্দেশ্য ছবি কে ব্যান করা না, তার উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের পছন্দমত একটি ভার্সানকে বাজারে পণ্য হিসেবে ছেড়ে দেওয়া । তাহলে প্রশ্ন থাকে যে ছবি সেন্সর সার্টিফিকেট নিয়ে হলে রিলিজ করে সেই ছবি কিভাবে পরে ব্যান হয়ে যায় । এই ব্যান ও মূলত দুই প্রকার - প্রথমটি হল সরকারী যেমন ঘটেছিল 'বিশ্বপুরম' এর ভাগ্যে তামিল নাড়ু সরকারের দ্বারা আর দ্বিতীয়টি হল কিছু মানুষ বা গোষ্ঠী যারা মনে করেন এই ছবি প্রদর্শন বন্ধ হওয়া উচিত । এই ভাবেই দীপা মেহতার 'ফায়ার' চলাকালীন পোস্টার ছিঁড়ে, ভাঙচুর করে ছবি প্রদর্শনকে ব্যাহত করা হয় ।দীপা মেহতার এর পরের ছবি 'ওয়াটার' এ আরও একধাপ এগিয়ে যান মৌলবাদীরা ,২০০০ সালে বেনারসের শুটিং এর সরকারী পারমিশন থাকা সত্ত্বেও সেটে ভাঙচুর করে শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয় ।দীপা পরে নতুন করে ছবির কাজ করেন শ্রীলংকায় এবং শেষমেষ ২০০৭ এ ছবিটি রিলিজ হতে পারে । ১৯৯২এ আমাদের অতি প্রিয় কলকাতায় 'সিটি অফ জয়' এর শুটিং বানচাল করা হয় কলকাতাকে নেগেটিভ আলোয় দেখানো হচ্ছে এই অজুহাতে । কিংবা আরো আগে সত্যজিত রায়ের ১৯৭১ সালে তৈরী ডকুমেন্টারি 'সিকিম' যেখানে সিকিমকে একটি সার্বভৌম দেশ হিসবে দেখানো হয়েছিল (চগয়াল রাজার অধীনে) সেটি ১৯৭৫ সালে ভারত সরকার ব্যান করে যখন সিকিম ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হয়ে যায় । স্টেট সেন্সরশিপের পাশাপাশি একই ভাবে বিদ্যমান স্ট্রিট সেন্সরশিপ ও যা ইচ্ছে করলেই কিছু মানুষ কে একত্র করেই একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে গোলমাল করা যায়। বিশেষ করে অনেক ডকুমেন্টারি পরিচালকরা তাই সেন্সরশিপ এবং তজ্জনিত অসুবিধার কথা ভেবে সরাসরি ডিভিডি তে ছবি বার করছেন কিংবা ইন্টারনেটে তুলে দিচ্ছেন । পূর্ণদৈর্ঘের বানিজ্যিক ছবির ক্ষেত্রে হয়ত শুধুমাত্র ইন্টারনেট বা ডিভিডি ভরসা করে থাকলে মুশকিল তবে আজকের ভার্চুয়াল সোশাল-নেটয়ার্ক সর্বস্ব যুগে ব্যান আর কতটা কার্যকারী থাকবে সেটা সময়ের সঙ্গে বোঝা যাবে ।
ভারতের ফিল্ম ফেডারেশন মতে, পুরো দেশে একমাত্র ১০১৬৭ একক পর্দার সিনেমা হল আছে - এই হিসেবে মাল্টিপ্লেক্সকে বাদ দেওয়া হয়েছে কারন তা মেট্রো বা বড় শহর ছাড়া এখন অব্দি নেই ।এর অর্থ হলো ১২০+ কোটির ভারতবর্ষে প্রতি ১.১৮ লক্ষ লোকের জন্য বরাদ্দ আছে ১টি হল । সুতরাং আমাদের দেশের জনসংখ্যার স্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে আমাদের দেশে লাগবে আরও অনেক সিনেমা হল আর সেই অভাবটাকে পূরণ এক অর্থে করছে হয়ত এই ইউটুব বা অন্যান্য স্ট্রিমিং মিডিয়া চ্যানেল গুলো ইন্টারনেটে । কারণ আসল সেন্সরশিপ করছে এই মার্কেট যা সর্বতোভাবে বানিজ্যিক । তাই আপনার ছবি সেন্সরশিপে আটকে না গেলেও, তার ওপর কোন দল , গোষ্ঠী কিংবা রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও আপনার ছবি হল রিলিজ না ও করতে পারে বা করলেও এত কম সময়ের জন্য হলে থাকেবে যে ন্যূনতম দর্শক ও দেখার সুযোগ পাবেন না হয়ত । প্রদর্শনের চাবিকাঠি হলওয়ালাদের হাতে সেখানে প্রতক্ষ্য ভাবে সরকারের বা রাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই আর সেখানেই লুক্কায়িত আছে প্রকৃত সেন্সরের চোরাবালি । তবে বিকল্প প্রদর্শন ব্যবস্থা হয়ত অচিরেই নতুন সম্ভাবনার সূচনা করবে ।
বাকি সব জটিলতার কারনে THE CINEMATOCRAPH BILL 20I3 এর দিকে কিছুটা হলেও আশার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা যেতে পারে । এর পরেও সেন্সরশিপ হবে, এর পরেও চেষ্টা হবে রাষ্ট্রের অনুমোদিত মতকেই একমাত্র মত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার খেলা, তবু যদি দর্শনগতভাবে বেশিরভাগ ছবির ক্ষেত্রে ক্লাসিফিকাশন করাটাই সেন্সর এর কাজ হয় তাহলে সাবালকত্বের দিকে এক পা বাড়ানো যাবে বলেই মনে হয় । ততদিন সেন্সরশিপের ভিকটিম না হয়ে তাকেই ভিকটিম করার চেষ্টা করা যাক বরং ফেদরিক ফেলিনির আপ্তবাক্য স্মরণ করে - "Censorship is advertising paid by the government" |

(Originally published in Desher Agamikaal, January 2015 issue )

The moon has blood clots - a review of Haider

“19 January 1990 was a very cold day despite the sun’s weak attempts to emerge from behind dark clouds…’Naara-e-taqbeer, Allah ho Akbar!’ I looked at my father; his face was contorted. He knew only too well what the slogan meant. I had heard it as well, in a stirring drama telecast a few years ago on Doordarshan, an adaptation of Bhisham Sahni’s Tamas, a novel based on the events of the 1947 Partition of India and Pakistan. It was the cry that a mob of Muslim rioters shouted as it descended upon Hindu settlements. It was a war cry…The crowd wanted to turn Kashmir into Pakistan, without the Pandit men, but with their women…Ma rushed to the kitchen and returned with a long knife. It was her father’s. ‘If they come, I will kill her,’ she looked at my sister. ‘And then I will kill myself. And you see what you two need to do.’ Father looked at her in disbelief. But he didn’t utter a word…My life flashed in front of me, like a silent film. I remembered my childhood with my sister. How I played with her and how she always liked to play ‘teacher-teacher’, making me learn the spellings of ‘difficult’ words…I remembered the red ribbon she wore; I remembered how she waited behind the closed gates of her school to catch a glimpse of Father’s shoes from beneath; I remembered how she threw a duster at one of her friends who tried to bully me;...We were fourteen. I often think of that moment…At fourteen we knew we were refugees, but we had no idea what family meant. And I don’t think we realised then that we would never have a home again.”
– Excerpts from Rahul Pandita’s 2013 novel Our Moon has Blood Clots.
The author was only fourteen years old in 1990 when he was forced to leave his home in Srinagar along with his family, who were Kashmiri Pandits. The memoir which is stark and vivid brings in a different take on the entire debate about the Kashmir problem of India where hundred of Kashmiri Pandits were tortured and killed and a few lakhs reduced to living in exile in their own country. It is this alternative take of massive ethnic cleansing organized by Islamist militants which flows in parallel to the more documented pro-independence demands of separatists in the valley which is curbed by the Indian National army using brutal force and incessant violence.
Why do we bring up this memoir which is spine-chilling and depressing? Because of Vishal Bharadwaj’s masterful film Haider which is an inspired adaptation of William Shakespeare’s Hamlet and is the third of a trilogy that includes Maqbool (adaptation of Macbeth) and Omkara (adaptation of Othello). Haider is based in Kashmir in 1995, after five years from Pandita’s telling times. Does Haider capture history in its entirety? It probably hasn’t. Which reflection for that matter ever is unbiased? As viewers and readers as well, don’t we always take sides, based on mis-information, half-beliefs, pseudo-secular ranting that disguises religious overtones and so forth? As the “#Boycott Haider” gets popularity in negative trending in Twitter, it is probably prudent to pause a bit and accept that Haider’s reality is a bit fractured.  Yes, it did mention the Kashmiri Pandit’s in one of the scenes where the Army chief spoke to the general public who rallied against the Army’s indiscriminate handling of Kashmiri Muslims. However, there is no doubt that Vishal Bharadwaj and his script writer Basharat Peer (famous Kashmiri journalist and author of yet another heart-wrenching memoir of the valley - Curfewed Night) did portray the atrocities meted out against the separatist revolutionaries and the incapacity of general Kashmiri muslims in the hands of the separatists and the faceless, de-humanized, vandal Indian Army. It is more in that sense, a one-way drama of a nation using iron fists in the form of AFSPA to curb, dominate and trample every voice that is not taking any particular side as well. Early in the film when Haider’s mother Ghazala asks her husband Dr. Hilal Meer whose side he is taking when he decides to operate a militant in his own home, the doctor replies in assurance that he takes the side of life like every doctor will do. This is particularly interesting since this is one trifle note that the director does touch upon as a sublime whiff for the attentive viewer to keep a mark on. The visual landscaping of Haider mesmerizes with the dark panorama – cold and chilling. There is no Shammi Kapoor or Sharmila Tagore in the reality or the perception of it. The mornings don’t break into sunlight and azaans, rather there are Army raids where every male of the village need to line up with their identity cards.  The sprawling lakes and the Jhelum seem frozen like the dead river inside, dead and black. The director’s camera moves over the valley – where are the temples and the ruins of them courtesy Sikander Butshikan and others who followed his idealogy apart from the very late climax song and dance which was choreographed using the Martand Sun Temple in the background – a temple which bears testimony of the ravaged history of the Kashmiri Hindus in the valley? Yet, Haider to me remains an important film in the legacy of Indian cinema primarily for a few notable points worth a mention.
First, like Maqbool and Omkara which mostly tread the original Shakespearean line of narrative with suitable Indianized alterations and contemporary modernizations here as well we find soliloquies seemingly absent, allegories of grave digging (your own grave that is!), play within play in the Bismil song as a proof of Claudius aka Khurram’s guilt and most significantly the ghost of the palace changed to Rooh Dar (an enigmatic Irrfan Khan who shifts the film in a completely different gear just before the intermission). In keeping with the main flow of the Shakespearean tragedy, yet institutionalize within Indian paradigm is no mean task and the director with three films in the trilogy ensures that he is probably the only Indian film maker to have adapted Shakespeare with success till date and repeated the success twice.
Second, the most popular notion of Hamlet in the popular mind is the famous “To be or, not to be” adage which is transported by Haider a bit differently as “Dil ki agar sunu toh tu hai...Dimag ki sunu toh tu hai nahi. Jaan lun ki Jaan dun? Main rahoon ki main nahi”. Actually, the dilemma of Hamlet is seemingly absent in the madness of Haider.  Here is a young man who has been de-fathered by the machineries of the state, betrayed by his own mother, back-stabbed by his child hood friends Salman(s), devastated by his own uncle who politicks against him and his deceased father and the separatist terrorists who take advantage of him to make him a pawn in their machinery instead. Where is the personal dilemma for Haider? Life is fast, cruelly paced for him even to have a dilemma but just to follow the ordeal to take revenge of his father’s death. Vishal Bhardwaj preserved the narrative linearity and moulded Haider within the realms of revenge as the basic undertone.
Third, Haider’s love/hate relation with his mother – a sublime Tabu who can hold so much in her eyes that she doesn’t need to speak! She is teary-eyed yet non-melodramatic, emotions that touch the verge of sentiments but not without for once making you feel for her. She is the villain she admits to her son but to her credit Tabu as Ghazala moves Haider away in a film which is supposed to be centered round him only. By making a side character more powerful than the corresponding positioning in the original plot, Vishal Bhardwaj seem more ambitious in the third part of the trilogy than the previous ones. Though there have been incestuous markers between Gertrude, the Queen of Denmark and Hamlet, her son yet never did she hold the reigns in her hand as definitely as Ghazala, towards the end of Hailder. There is definite reference of strong Oedipal Complex between Haider and Ghazala in scenes more than once but most remarkable when Haider (shown two times with two different Haiders resembling two ages) kisses her neck after applying fragrance – Tabu’s repressed look at the mirror haunts like trapped fire.
Fourth, the enticing ending of the film with reference to the near start of it and also somewhere in the middle when Haider meets Ghazala at their devastated home. In the beginning we find a confused, emotional and disturbed Haider at the foot of his ravaged home which he left to study at Aligarh. He came back as a poet to find his jannat ruined – where is his home now? His home actually has turned into a kabarastan – a graveyard. In the final scene, after the final destruction and self–annihilation of Ghazala we find Haider release Khurram who is at his mercy and run back. The setting is a graveyard, made double so after the carnage and bloodshed, the lone house is torn down by bullets and yet this is where Haider runs probably. Is it the home for Haider, his destination where he left his dead lover Arshia? Does home and cemetery become synonyms here? In releasing Haider from being dead, Vishal Bhardwaj keeps him tormented, in search of an elusive home. And in this final act, the director makes Haider, not just one unique individual (almost like a ‘hero’) in search of revenge and finding the fruitlessness of the exercise – he thereby relates Haider with the other unfortunate youth of the Kashmir valley who are torn between multiple forces which rip them apart. In this regard Rahul Pandita becomes Haider and they interchange their experiences – the troops, the forces, the camps and the execution chambers change colour, the brutality of exigency remain the same, their modes differ may be and at times the degree of ‘punishment’. In one crucial scene, Haider’s grandfather argues with a reactionary separatist –“Bandook sirf inteqaam janti hai, aazaadi to lathi se bhi mil jaati hai”. It is interesting a quote given the film got released on the 2nd of October and is something which has been long forgotten as a lesson.
Apart from the issues about the veracity of representation of the Kashmir politics in question, Haider remains a major film in the Indian context for being cinematically eloquent with deft imageries, slick edit, minimalist yet pronounced music and superlative acting by everyone. It is a film, notwithstanding its weighted lineage of William Shakespeare, will be an Indian film to look at warmly. It looks into the individual from a generic standpoint and empathizes with him. May be one day, someone will make a film on Rahul Pandita’s book. Haider will be a precursor to such attempts to look at the collective history of the land, to make the representations more wholesome, more rounded and more liberal. Since, it is not only Rahul’s or even Haider’s but for all of us, our moon does have blood clots.

(This article was published originally in Dearcinema)